……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
৩য় ক্লাসের হোমওয়ার্ক
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
যখন ধর্ষণ ও খুনের সাজা হয় সর্বোচ্চ ১০ বছর!
ঘটনা- ০১
আজ থেকে ০৪ বছর আগে আমাদের এলাকায় ১৭ বছরের এক বখাটের ধর্ষণের শিকার এবং নির্মমভাবে খুন হয় ১১ বছরের এক শিশু! পুরো এলাকা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং আমাদের বেশকিছু সামাজিক সংগঠন খুনিকে ফাঁসির রায়ে সাজা দিতে মানববন্ধন এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাপ প্রয়োগ করেন। পুলিশ ক্লুলেস মামলা থেকে ধর্ষককে গ্রেফতার করে এবং ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নিয়ে খুনিকে আদালতে প্রেরণ করেন।
ঘটনা- ০২
মাস দুয়েক আগে মুন্সিগঞ্জে একই স্কুলের বখাটে সহপাঠীদের দ্বারা এক মেয়ের উত্যেক্ত করার প্রতিবাদ করায় সহপাঠীদের হামলা ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশু। এমন ঘটনায় হতবাক হয় পুরো দেশ। এলাকাবাসী খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার জন্য আন্দোলন করেন। নিহতের পরিবার যেকোনো মূল্যে ছেলে হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কামনা করে আইনের আশ্রয় চান!
.
চাইলে, ০৩, ০৪, ০৫ করে অসংখ্য ঘটনা বলা সম্ভব, তবে আসল কথা শুরু করা যাক।
.
উপরোক্ত দুটি ঘটনাতেই অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কামনা করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, উভয় ক্ষেত্রেই কী অপরাধীদের ফাঁসি সম্ভব?
.
প্রাথমিকভাবে সবাই হ্যাঁ বল্লেও, প্রকৃত অর্থে এখানে কারোই ফাঁসি হবে না এবং তাদের সাজা হবে বড়জোর ৩-১০ বছর!
অবাক হচ্ছেন? জিদ হচ্ছে খুব?
.
ওয়েট, বিষয়টা ক্লিয়ার করছি। উপরোক্ত দুটি ঘটনাতেই যদি আমরা লক্ষ্য করি তবে দেখবো, উভয়ক্ষেত্রেই অপরাধীর বয়স ১৮ বছরের কম, যা শিশু আইন, ২০১৩ এর ০৪ ধারা অনুযায়ী অন্য আইনে যাহা কিছুই বলা থাকুক না কেন ১৮ বছরের কম সকল মানুষকেই শিশু হিসেবে বিবেচনা করার আদেশ করা হয়েছে।
.
যখন কোন আইনে “অন্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন” কিংবা “Notwithstanding” শব্দ ব্যবহার করা হয় তবে মনে রাখতে হবে, বাকি সকল আইনে যত কঠিন শাস্তি কিংবা প্রক্রিয়ার কথাই বলা হোক না কেন, এই আইনে বর্ণিত বিধানই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে। তাই দন্ডবিধি, ১৮৬০, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ কিংবা ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারাসমূহে খুন এবং ধর্ষণের সাজা যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই শিশু আইন ২০১৩ এর ০৪ ধারা অনুসারে বাকিসব বাতিল হয়ে এই ধারাই বলবৎ থাকবে।
.
শিশু আইন, ২০১৩ এর ৩৩ (১) ধারাতে বলা হয়েছে “অন্য কোন আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন শিশুকে মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা কারাদন্ড প্রদান করা যাইবে না”।
.
তাই আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশু আইন, ২০১৩ এর ৩৪ (১) ধারাতে যেহেতু বলা হয়েছে, কোন শিশু (১৮ বছরের নিচে) যে অপরাধই করুক না কেন, তার সাজা ৩-১০ বছর হবে সর্বোচ্চ, তাই শিশুর দ্বারা হওয়া কোন ধর্ষণ কিংবা খুন, সেই খুন বা ধর্ষণের সাজা কখনোই ফাঁসি কিংবা মৃত্যুদন্ড হবে না।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
২য় ক্লাসের হোমওয়ার্ক।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
“প্রথম ক্লাস রিভিউ; কনটেন্ট রাইটিং বাই প্রলয় হাসান”
“প্রলয় হাসান” নামটি শুনি আজ থেকে বছর দেড়েক আগে, কনটেন্ট রাইটিং কোর্স খুঁজতে গিয়ে। তখন সবাই বলতেছিল, “বাংলাদেশে কনটেন্ট রাইটিং এর উপর বেস্ট কোর্স”। কিন্তু কারণে অকারণে আর তখন কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে এগুতে ইচ্ছে করেনি। আজ যখন মে মাসের প্রথম দিকে প্রথম ক্লাসের রিভিউ লিখতে বসেছি তার ঠিক মাস তিনেক আগে “প্রলয় হাসানকে প্রথম দেখি “টু সেন্ট পডকাস্টে” তখন একটানা উনার দ্বিতীয় পডকাস্টটি দেখে ফেলি এবং সেটা থেকে খুঁজে পাই প্রথম পডকাস্ট। সেটিও দেখি ফেলি এক পলকেই।
.
দুটি পডকাস্টে উনার জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শুনে আমার মার্কেটিং এর উপর আগ্রহ বেড়ে যায় বহুগুণ। এমনিতেই আমি বিজনেস, ব্যান্ড, মার্কেটিং নিয়ে খুব আগ্রহী তবে ওনার মার্কেটিং নিয়ে এমন গভীর এবং সরল আলোচনা আমাকে যথেষ্ট অবাক করে। সেই সাথে এটাও স্মরণ করিয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে পাল্লা দিতে বাংলাদেশে কনটেন্ট মার্কেটিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কনটেন্ট মার্কেটিং-এ একজন কনটেন্ট রাইটারের ভবিষ্যত কতটা উজ্জ্বল। তারপর প্রলয় হাসান এর “কনটেন্ট মার্কেটিং, কনটেন্ট টু ক্যাশ” বইটি রকমারি থেকে অর্ডার করি এবং এই বইটাও শেষ করি খুব অল্প সময়ে। বইটি পড়ে নতুন উদ্যমে কনটেন্ট রাইটিং শুরু করার মনস্থির করি। যদিও আমার ফ্রিল্যান্সিং জার্নিটা শুরু হয়েছিল কনটেন্ট রাইটিং দিয়েই তবে বেশকিছু কারণে এসইও এবং এসএমএমে শিফট হয়ে যাই। কিন্তু এখন আমি কনটেন্ট রাইটিং, কপি রাইটিং, স্ক্রিপ্ট, কনটেন্ট মার্কেটিং- এর সুবিশাল জগত দেখতে পাচ্ছি, আমার মনে হচ্ছে যে লেখালেখি এবং বিজনেস সম্পর্কে আগ্রহী তার জন্য কনটেন্ট মার্কেটিং হতে পারে, সময়ের সবচেয়ে অর্থবহ সিদ্ধান্ত।
.
সে যাই হোক, প্রথম ক্লাসের রিভিউ লিখতে গিয়ে অনেক কিছু লিখে ফেলেছি তবে, লেখাগুলো যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক আমার প্রথম ক্লাস পর্যন্ত আসার পেছনে। আমি “কনটেন্ট মার্কেটিং বইয়ের প্রথম কয়েক পাতা পড়েই সিদ্ধান্ত নেই, আমি আবার পুরোদমে কনটেন্ট রাইটিং শুরু করবো, একজন শিক্ষার্থী যে প্রলয় হাসানের কনটেন্ট রাইটিং কোর্সটি করেছেন তার কাছ থেকে রিভিউ নিয়ে কোর্সে ভর্তি হই এবং ক্লাস শুরুর আগে কপি রাইটিং এর উপর একটা ওয়েবিনারেও যুক্ত হই। সবমিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে, “ আমার এপর্যন্ত করা যতগুলো কোর্স তার মধ্য থেকে সবচেয়ে শিক্ষণীয় এবং হাতেকলমে শেখার মতো কোর্স হতে যাচ্ছে প্রলয় হাসানের কনটেন্ট রাইটিং ৮ম ব্যাচের কোর্স।
.
আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম প্রথম ক্লাসটির জন্য। অবশেষে গত ২৭ এপ্রিল রাত ১০ ঘটিকায় আমাদের বহুল প্রতিক্ষিত প্রথম ক্লাসটি শুরু হয়। ক্লাসের শুরুতে প্রলয় হাসান ভাই সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করে শুরু করেন কনটেন্ট রাইটিং এর প্রকারভেদ নিয়ে। এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি কনটেন্টের ১০টি প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করেন, অথচ আমি একজন কনটেন্ট রাইটার হয়েও জানতাম না কনটেন্টের এতোগুলো প্রকারভেদ হয়। তারপর তিনি একেএকে সবগুলো প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। যা আমাদের সবাইকেই কনটেন্ট মার্কেটিং এর সাথে নতুন করে পরিচিত হতে সাহায্য করে।
তিনি শুধু ১০টি প্রকারভেদ নিয়ে থিউরিটিক্যাল আলোচনাই করেননি, সেই সাথে নেইলপ্যাটেল, খালিদ ফারহান, বিফওয়ালাসহ আরও অনেক জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উদাহরণ টেনে আমাদেরকে প্রত্যেকটি প্রকারের আলাদা আলাদা বাস্তবসম্মত অস্বিত্ব বুঝাতে সচেষ্ট হন।
.
২য় ধাপে এসে তিনি কনটেন্ট রাইটিং এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিং এর মাঝে পার্থক্য তুলে ধরেন। এখানে তিনি বিস্তারিত আলোচনা রাখেন কনটেন্ট রাইটিং এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিং এর একেবারে বেইসিক থেকে এডভান্স পর্যন্ত। যেখানে আমরা শিখতে পারি, গতানুগতিক কনটেন্ট রাইটিং থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং কতটা আলাদা এবং গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে।
.
ক্লাসের মূল আলোচনার বাহিরেও আমাদের প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল, তাই আমরা নানারকম প্রশ্ন করে মূল আলোচনাকে আরও বেশি প্রাণবন্ত করে তুলি। তখন ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হচ্ছিল, এমন একজন মেন্টরই তো আমি খুঁজতেছিলাম, যার সাথে কনটেন্ট এবং মার্কেটিং এর জানা-অজানা, বৃহৎ-ক্ষুদ্র সকল বিষয় নিসঃকোচে জানতে চাওয়া যায়।
.
প্রলয় হাসান ৩য় ধাপে এসে ওনার লেখা বেশ কয়েকটি বইয়ের প্রচারণা করেন। আমি সবগুলো বই-ই কিনবো বলে মনস্থির করি।
.
সবশেষ তিনি হোমওয়ার্ক দেন ৩০০ শব্দের ভেতর প্রথম ক্লাসের রিভিউ লিখতে অথচ আমি লেখার এই পর্যায়ে এসে খেয়াল করলাম ৩০০ শব্দের ভিতরে। এর বেশি না, অথচ আমি ভাবছিলাম কমপক্ষে ৩০০ শব্দ!
.
সে যাই হোক, অনেক বেশি বকবক করে ফেলেছি, তবে প্রথম ক্লাসে আমাদের উপস্থিতি অনেক কম ছিল যা আমাকে অনেক বেশি মনক্ষুন্ন করেছে। আমি এমন একটা কোর্সে আরও অনেক অনেক শিক্ষার্থী আশা করেছিলাম। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, প্রথম ক্লাসের প্রথম দিকটা গিয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাকিদের যুক্ত করার বিড়ম্বনা পোহাতে, আর শেষ ধাপ কেটেছে আমিসহ আরও কয়েকজনের একটা বই নিয়ে বিতর্কের মধ্য দিয়ে।
.
তবে সামনের ক্লাস থেকে আমাদের অনেক বেশি সিরিয়াস হতে হবে মনে হচ্ছে, কারণ এই কোর্সেই প্রলয় হাসান থেকে বের করে আনতে হবে কনটেন্ট মার্কেটিং এর অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত! (হি হি)
.
বাকি ক্লাসগুলোর জন্য অপেক্ষা। দেখা যাক, শেষপর্যন্ত কী হয়!
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..